সরকার এর জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইন ৯৯৯ আরও আধুনিক হচ্ছে
৯৯৯ আরও আধুনিক হচ্ছে
সংসদ প্রতিবেদক, এএনবি নিউজএজেন্সি ডটকম : সরকার এর জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইনের ব্যবস্থাপনায় জিআইস, সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরা, এমনকি আইওটির (ইন্টারনেট অব থিংস) মত আধুনিকমত প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলে সোমবার জাতীয় সংসদে তথ্য দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর ৯৯৯ চালু হওয়ার পর থেকে গত ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩৩ লাখ ৩২ হাজার ৪৪টি কলের সেবা দেওয়া হয়েছে।
এই সেবা আরও নিখুঁত করতে বাংলাদেশ পুলিশের তত্ত্বাবধানে সারাদেশের জিআইএস মানচিত্র ধরে একটি সফটওয়্যার তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ততে ঘটনাস্থল বা সেবাগ্রহীতার অবস্থান আরও দ্রুত নির্ণয় করা সম্ভব হবে।
“অপরাধ মানচিত্রের বিশেষ একটি ফিচার থাকবে এই সিস্টেমে, যার মাধ্যমে যে কোনো এলাকার অপরাধ প্রবণতা ও ধরণ অনুযায়ী পুলিশ প্রস্তুতি নিতে পারবে।
“সেবাপ্রদানকারী সকল যানবাহন জিআইএস প্রযুক্তির আওতায় চলে এলে রেসপন্স টিমের অবস্থান সরাসরি সনাক্ত করা যাবে, বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির অবস্থান সনাক্ত করে দ্রুত সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।”
আইওটির (ইন্টারনেট অব থিংস) মত আধুনিকমত প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “কোনো জরুরি পরিস্থিতি বা দুর্ঘটনায় মানুষ সতর্ক না করলেও এই প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ কে তথ্য জানিয়ে দেবে।”
সার্ভেইল্যান্স সিকিউরিটি ক্যামেরা স্থাপনের পরিকল্পনা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত ও নিখুঁত মনিটরিংয়ের জন্য পুলিশ সদস্যদের শরীরে বডি ক্যামেরা এবং চশমায় বিশেষ ধরনের ক্যামেরা থাকবে। তাতে ৯৯৯ সার্ভিস সেন্টার থেকে সরাসরি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং ঘটনাস্থলের ভিডিও সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা যাবে।
“দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ক্যামেরা স্থাপনের মধ্যে দিয়ে জরুরি পিরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা যাবে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলা দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে। আধুনিক ডেটা সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে সকল তথ্য সংরক্ষণ ও পরবর্তী নিরাপত্তা পরিকল্পনায় ব্যবহারের অবারিত দ্বার উন্মোচিত হবে।”
মন্ত্রী জানান, বর্তমানে ৯৯৯ সেবায় একসঙ্গে ১০০টি কলের জবাব দেওয়া যায়। এই সংখ্যা আগামীতে ৫০০ তে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
পাশাপাশি ১০০ আসনের একটি ডিজাস্টার রিকভারি সেন্টার করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের, যাতে কোনো কারণে বর্তমান সার্ভিস সেন্টার বন্ধ হয়ে গেলে রিকভারি সেন্টার থেকে সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় সেবা চালু করা যায়।
এছাড়া জরুরি সেবা ৯৯৯ এর জন্য আধুনিক কমপ্লেক্স নির্মাণ, সব থানাকে একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং ব্যবস্থায় আনা এবং প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ার কথাও বলেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দি কারাগারে
সাংসদ দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের কারাগারগুলোর বন্দি ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার ৯৪৪ জন। আর কারাবন্দির সংখ্যা ৮৮ হাজার ৮৪ জন।
“কারাগারের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য সরকার নবনির্মিত পাঁচটি কারাগারকে কারাগার–১ এবং পুরাতন কারাগারকে কারাগার–২ ঘোষণা করেছে। এছাড়া নতুন কারাগার নির্মাণ এবং পুরাতন কারাগারের সম্প্রসারণ/নতুন ভবন তৈরি করেও বন্দি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।”
সংরক্ষিত আসনের সাংসদ শামসুন নাহারের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে ১১৯তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম দেশ হিসেবে ‘ঝুঁকিমুক্ত নিরাপদ’ ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন করেছে।
“বিদ্যমান মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ও ই-পাসপোর্ট যুগপৎভাবে চলমান রয়েছে। বর্তমানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঢাকার তিনটি পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। আগামী ১৮ মাসের মধ্যে সকল অফিসে এটা চালু হবে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সব মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ই-পাসপোর্টে রূপান্তর করা হবে।”
এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০১৯ সালে এক লাখ ৭১ হাজার ৭৫২ জন মাদক চোরাকারবারির বিরুদ্ধে এক লাখ ৩০ হাজার ৬৮১টি মামলা করা হয়েছে।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার বৈঠক শুরু হলে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।